JACKSON HEIGHTS OFFICE

BRONX OFFICE

LANGUAGES WE SPEAK

  • English
  • Bengali
  • Hindi/Urdu
  • Spanish
  • Nepali

করোনা এবং ওসিডি

পৃথিবীতে এমন কোন পুরুষ বা মহিলা নেই যে, জীবনের কোন না কোন সময় মেরুদন্ড ব্যথায় ভোগেন নাই। আর বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, শিরদাঁড়া বা মেরুদন্ড সমস্যার বেশির ভাগ কারণ ম্যাকানিকেল। আর ডিস্ক প্রলাপ্সের অবস্থান তৃতীয়, কিন্তু বর্তমানে এই সমস্যা দিন দিন এতই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের রীতিমতো ভাবিয়ে তুলছে।

ডিস্ক হচ্ছে মেরুদন্ডের দুই কশেরুকার মধ্যর্বতী কার্টিলেজ জাতীয় এক প্রকার রাবারের মতো পদার্থ। যা মেরুদন্ডের এক হাড়কে অপর হাড় থেকে বিভক্ত রাখে। যাতে একটি হাড় আরেকটির সঙ্গে ঘর্ষণ না লাগে এবং শরীরের ওজন বা শক এ্যাবজরভার হিসেবে কাজ করে। ডিস্কের ভেতরের অংশ নিউক্লিয়াস পালপোসাস যা জেলির মতো নরম এবং বাইরের অংশ থাকে এ্যানুলাস ফাইব্রোসাস। আঘাত পেলে, উঁচু স্থানে থেকে পড়ে গেলে, মেরুদন্ডের লিগামেন্ট বা মাংসপেশি দুর্বল হয়ে গেলে, ভুল ভাবে ভারি জিনিস তুলতে গেলে, অত্যধিক পরিশ্রম করলে বা সারাক্ষণ শুয়ে বসে থাকলে। দীর্ঘক্ষণ নিচু স্থানে পিঁড়ি, মোড়া বা মাটিতে বসে থাকলে, মেরুদন্ডের ভুল অবস্থান, পুষ্টির অভাবে তাছাড়া আরও নানাবিধ কারণে ডিস্ক প্রলাপ্স হতে পারে। আমাদের দৈনদিন প্র্যাকটিসে সারভাইকেল চার/পাঁচ, পাঁচ/ছয় এবং লাম্বার চার/পাঁচ, পাঁচ/স্যাক্রাল এক মধ্যবর্তী ডিস্ক প্রলাপ্স রোগী বেশি দেখা যায়।

কোমরে ডিস্ক প্রলাপ্সের লক্ষণ : কোমরে প্রচন্ড ব্যথা বা ভারি জিনিস উত্তোলন করতে বা হাঁচি বা কাশি দিতে কোমরে বা পায়ে ব্যথা অনুভব অথবা পায়ে টান লাগা। কোমরে ঝিন ঝিন, শীন শীন, ঝালাপোড়া বা অবশ অবশ ভাব, এক জায়গায় অনেকক্ষণ বসলে পুরো কোমরে বা শিরদাঁড়ায় আস্তে আস্তে ব্যথা বেড়ে যাওয়া। চলাফেরা বা হাঁটা-হাঁটিতে ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হওয়া, শুয়ে থাকলেও ব্যথা অনুভব হওয়া। কিছু কিছু রোগীর কোমর একদিকে বেকে যাওয়া। এভাবে চলতে চলতে ব্যথা কোমরে অনুভূত না হয়ে শুধু পায়ের মাংসে বা শিরদাঁড়ায় কামড়ানো জাতীয় ব্যথা হওয়া। অনেক সময় কোমর ব্যথার পাশাপাশি প্রশ্রাব বা পায়খানার অনুভূতি না থাকা বা সমস্যা হওয়া, পায়ের মাংসপেশি শুকিয়ে যাওয়া বা এক পা বা দুই পা প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়া।

ঘাড়ের ডিস্ক প্রলাপ্সের লক্ষণ : ঘাড়ে ব্যথা হওয়া, ঘাড় নাড়াতে ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হওয়া। ঘাড় একদিকে বেঁকে যাওয়া, ঘাড় হতে এক হাতে বা দুই হাতে ব্যথা উঠানামা করা। হাতে শীন শীন, ঝালাপোড়া বা কন কন জাতীয় তীব্র ব্যথা বা অনেক সময় হাত অবশ ভাব বা ভারি ভারি লাগা, আস্তে আস্তে হাতের কর্মক্ষমতা কমে আসা। হাত নিচু ঝুলিয়ে রাখতে অসুবিধা হওয়া এবং হাতের মাংসপেশি শুকিয়ে যাওয়া।

সর্তকতা: ডিস্ক প্রলাপ্স হলে সম্পূর্ণ বিশ্রামে যেতে হবে। দৈনন্দিন চলাফেরা, কাজ কর্ম বন্ধ রাখতে হবে। বোঝা বহন নিষিদ্ধ এবং সাধারণ শারীরিক ব্যায়াম অবশ্যই বন্ধ থাকবে। কাজকর্ম বা চলাফেরা করলে সমস্যা জটিল হয়ে যেতে পারে। অবশ্যই নরম খাবার খেতে হবে যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়।

রোগ নির্ণয়: কাহারও এ জাতীয় সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে বিশেবজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসক রোগীকে শারীরিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে রোগ নির্ণয় করবেন এবং প্রয়োজন হলে বিভিন্ন প্যাথোলজিক্যাল পরীক্ষা এবং এমআরআই করলে ও রোগ নির্ণয় করা যায়। তার জন্য অবশ্যই বিশেষেজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

চিকিৎসা : গবেষণায় দেখা গেছে, বেশির ভাগ ডিস্ক প্রলাপ্স রোগী অপারেশন না করে ম্যানুয়াল থেরাপি, ইন্টারফেরেনশিয়াল থেরাপি, ম্যানুপুলেশন থেরাপি, অটো ট্রাকশন ট্রইথ ডিকম্প্রেশন থেরাপি নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। এতে করে অপারেশনের জটিলতা থেকে মুক্ত থাকা যায়। তার জন্য রোগীকে অবশ্যই কোন বিশেষায়িত হাসপাতালে আনুমানিক ২-৪ সপ্তাহ ভর্তি থাকতে হবে। চিকিৎসা চলাকালীন কোন প্রকার মুভমেন্ট করা যাবে না। চিকিৎসা শেষে রোগীকে একটানা ৩ মাস নির্দেশিত এক্সারসাইজ প্রত্যহ ২/৩ বেলা চালিয়ে যেতে হবে। পসচারাল এডুকেশন শিখে নিয়ে মেনে চলতে হবে।